বাঙালির শেষ পাতে মিষ্টি না হলে একেবারেই চলে না। আর যদি সেই মিষ্টির মধ্যে থাকে সকলের প্রিয় মিষ্টি দই(mishti doi) তাহলে তো কোনো কথায় হবে না। এই মিষ্টি দই(mishti doi) যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। দই আমাদের শরীরের বহু উপকারী একটি খাবার।
আমরা সাধারণত বাজার থেকে দই কিনে খাই। কিন্তু অনেক সময় আমাদের পক্ষে দই কেনাটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই আপনারা খুব কম উপকরণে বাড়িতে দই বানানোর রেসিপি তৈরি করে নিতে পারেন। কিন্তু অনেকেই বাড়িতে দই পাতার নিয়ম ঠিকঠাক মতন জানেন না। ফলে দই ঠিক মতন জমাতে পারেন না। তাই দই তৈরির রেসিপি আপনারা ঠিক ভাবে জেনে নিন আমার এই রেসিপির মধ্যে দিয়ে। দেখবেন একদম দোকানের মতোই দই তৈরি হবে আর আপনাদের বাজারে যাওয়ার দরকারই হবে না। এই দুধ থেকে দই তৈরি করার পদ্ধতি আপনারা ঠিক ভাবে অনুসরণ করলে আপনার দই জমাতে কোনোরকম অসুবিধা হবে না। চলুন তাহলে দেখে নিন আজকের এই মিষ্টি দই রেসিপি(mishti doi recipe)।
উপকরণ ➤
- দুধ – ১ লিটার
- গুঁড়ো দুধ – ১/২ কাপ
- টক দই – ১/২ কাপ
- চিনি – পরিমান মতো
মিষ্টি দই বানানোর পদ্ধতি ➤
◍ প্রথমে একটি কাপড়ের মধ্যে টক দই নিয়ে কাপড়টিকে ঝুলিয়ে রাখুন দই থেকে ভালো করে জল ঝরানোর জন্যে।
◍ এবারে একটি কড়াইতে দুধ গরম করতে বসিয়ে দিন। দুধ ফুটতে শুরু করলে ১ কাপ দুধ তুলে নিন একটি ছোট বাটিতে।
◍ এখন বাটির দুধের মধ্যে ১/২ কাপ গুঁড়ো দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিন যাতে কোনো দানা না থাকে।
◍ এবার কড়াইয়ের দুধ ভালো করে ফুটিয়ে পরিমান মতো চিনি দিয়ে দিন। দুধ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ঘন করে নিন।
◍ এবারে এই দুধের মধ্যে বাটিতে তৈরি করা দুধ ছাকনি দিয়ে ছেকে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন দেখবেন দুধ খুব ভালো ঘন হয়ে গেছে। এখন জাল বন্ধ করে নিন।
◍ এরপরে দই একটু লালচে করার জন্যে চিনি ক্যারামেল করে নিতে হবে। তারজন্যে একটি কড়াইতে ১/২ চিনি ও ২ চামচ জল দিয়ে কম আঁচে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন। নাড়তে নাড়তে দেখবেন চিনির মিশ্রণ লালচে হয়ে আসছে।
◍ চিনি লালচে হয়ে গেলে এরমধ্যে দিয়ে দিন ঘন করে রাখা দুধ। এবারে পুরো মিশ্রণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। দেখুন যেন কোনো দানা না থাকে। মিশ্রনগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে জাল বন্ধ করে দিন।
◍ এখন সেই জল ঝরানো টক দই ভালো করে ফেটিয়ে ক্রিমের মতন করে নিন।
◍ এরপরে সেই দুধের মিশ্রণ হাতে সহ্য হয় এমন উষ্ণতায় নিয়ে আসুন। তারপরে ফেটানো টক দই ওই দুধের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে গেলে এই দুধের মিশ্রণ একটি মাটির হাড়ির মধ্যে ঢেলে নিন।
◍ এবার একটি বড়ো পাত্রের মধ্যে একটি তোয়ালে বিছিয়ে তার উপর একটি স্ট্যান্ড বসিয়ে মাটির হাঁড়িটি বসিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন। মাটির হাড়িটা তোয়ালে দিয়ে পুরো মুড়ে দিন। তারপরে পাত্রটির ঢাকনা বন্ধ করে কম আঁচে ৪৫ মিনিটের জন্যে হতে দিন।
◍ তারপর জাল বন্ধ করে পাত্রটি ভালো করে ঠান্ডা করে নিন। পাত্রটি ঠান্ডা হয়ে গেলে হাড়িটা বের করে নিন। এবারে দেখুন দই ভালো মতন জমে গেছে।
◍ এখন মাটির হাড়ি থেকে দই কেটে কেটে পরিবেশন করতে পারেন।
মনে রাখবেন ➤
◆ আপনারা যেকোনো পাত্রে দই জমাতে পারেন।
◆ আপনারা ফুল ক্রিম দুধ ব্যবহার করতে পারেন।
◆ আপনারা যদি সাদা দই খেতে চান তাহলে চিনি ক্যারামেল করার দরকার নেই।
◆ আপনারা টক দই থেকে খুব ভালো করে জল ঝরিয়ে নেবেন।
◆ মিষ্টি দই তৈরিতে আপনারা টক দই ও মিষ্টি দই দুটোই ব্যবহার করতে পারেন।
প্রশ্ন ও উত্তর ➤
◉ প্রশ্ন – মিষ্টি দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা কি ?
➣ উত্তর – দই এর মধ্যে টক দই একটি পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু মিষ্টি দই মোটেই পুষ্টিকর নয়। বরং এতে শরীরে বিভিন্ন রোগ জন্ম নিতে পারে।
◉ প্রশ্ন – মিষ্টি দই এর ইংরেজি কি ?
➣ উত্তর – মিষ্টি দই এর ইংরেজি হল Sweet Curd.
◉ প্রশ্ন – মিষ্টি দই খেলে কি ওজন বাড়ে ?
➣ উত্তর – হ্যাঁ, মিষ্টি দই খেলে ওজন বাড়ে।
◉ প্রশ্ন – সকালে টক দই খাওয়ার উপকারিতা কি ?
➣ উত্তর – টক দই শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া টক দই খেলে অনেক সময় পেট ভর্তি থাকে ফলে বেশি পরিমান খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।